ঢাকা ০৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পথশিশুদের নিয়ে একদল মেধাবী তরুণ শিক্ষার্থীদের নতুন সম্ভাবনা

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড. এম আই পাটোয়ারী ২নং হলের এক ঝাক তরুন শিক্ষার্থীর পথশিশু সেবার উদ্দেশ্যে “লালটাই কমিউনিটি নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মোড়ক উন্মোচন ” এবং ১১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির সাধারণ সভায় সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে এ কমিটি গঠন করা হয়। রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে সভা চলে রাত বারোটা পর্যন্ত। এর আগে গত ১৬ আগস্ট খালিদ হাসান টিটোকে সভাপতি ও নিরব খন্দকারকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি গঠন করা হয়।

পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যরা হলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক
ইমতিয়াজ সিদ্দিক, শৃঙ্খলা বিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ হুসাইন,মোরশেদুল মুরাদ,ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি সবুজ মন্ডল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সায়মুন সজিব,মিডিয়া সেক্রেটারি অমিত সরকার আয়ান,প্রচার সম্পাদক শাওন বিশ্বাস, ক্রীড়া সম্পাদক মাহফুজ হক আতিক, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক খালিদ হাসান সাফি।

লক্ষ্য

সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বাল্য বিহাহ প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা রাখা, সামাজিক, মানবিক ও মানসিক বিকাশে শিশুদের অগ্রধিকার প্রতিষ্ঠা করা, বিশেষ করে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব প্রদানের সক্ষমতা তৈরী করাই হলো মূল লক্ষ্য।

উদ্দেশ্য
লালটাই কমিউনিটি ক্লাব এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে সারা বাংলাদেশের সকল শিশুরা তাদের প্রতিভা বিকাশে সতস্ফুর্তভাবে সরাসরি অংশগ্রণ করতে পারে। পাশাপাশি শিশুদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনার কৌশল, সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা ও বাস্তবায়ন কৌশল, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানে দক্ষতা অর্জনে স্থায়ী ও বিশস্ত সংগঠন হিসেবে কাজ করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

লালটাই কমিউনিটি ক্লবের সভাপতি খালিদ হাসান টিটো বলেন
শিশু আর পথশিশু শব্দ দুটি আলাদা মনে হলেও শিশু আর পথশিশুর মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। যদিও তারা রাস্তায় জীবন-যাপন করার কারণে পরিচিত হয় পথশিশু নামে। আর মানুষের মানবতা এবং মনুষ্যত্ব দিন দিন হ্রাস পাওয়ায় আমাদের দেশে পথশিশুর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। এর জন্য সুশিক্ষা ও সচেতনতার বড়ই অভাব। হ্যাঁ, একশ্রেণির অশিক্ষিত ও দরিদ্র মানুষ অপরিকল্পিতভাবে সন্তান জন্ম দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর তাদেরকে পরিত্যাগ করে। আর সন্তানদের রোজগারের জন্য মারধর করে থাকে। ফলে শুরু হয় তাদের অবহেলিত কষ্টের জীবন। পথশিশুদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কচি, কোমল মুখগুলো পরিচিত হয় নতুন নতুন অনেক অসহনীয় অভিজ্ঞতার সঙ্গে। কঠিন বাস্তবতার কারণে একসময় তারাই হয়ে ওঠে সমাজের নেশাখোর, ছিনতাইকারী, চোর ইত্যাদি। আর ছোট ছোট বাচ্চারা রাস্তায় পত্রিকা বিক্রি করে, ফুল বিক্রি করে কিংবা কিছু খাবে বলে টাকা চায়। তাদের ভবিষ্যত কী হবে যে বয়সে তাদের হাতে থাকা উচিৎ বই-খাতা। সে বয়সে তাদের হাতে থাকে প্লাস্টিকের বস্তা! রাস্তায় রাস্তায় তারা প্লাস্টিক খুঁজে। কি নির্মম বেদনাদায়ক দৃশ্য!
অতএব, এই পথশিশুদের থাকা-খাওয়া এবং পড়াশোনার মাধ্যমে অন্যান্য বাচ্চাদের মতো স্বাভাবিক জীবন-যাপন করার, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা এবং তাদের ইচ্ছে ও স্বপ্নকে পূরণ করার সুযোগ করার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। ভালো গাইড লাইন দিতে হবে। তাহলেই একদিন পথশিশু নামক কোনো নাম শিশুর সঙ্গে যুক্ত হবে না। দেশ থেকে মুছে যাবে পথশিশু নামক শব্দটি। আর তারাও ফিরে পাবে স্বাভাবিক জীবন। শিশু থাকবে শিশুর মতোই।

লালটাই কমিউনিটি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিরব খন্দকার বলেন
পরিবেশ-পরিস্থিতি, পারিবারিক অস্বচ্ছতা ও রাষ্ট্রের দায়িত্বহীনতার কারণে ক্রমশ পথশিশুদের পরিসংখ্যান দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। একদিক থেকে মানবতা এবং মনুষ্যত্ব হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে পথশিশুদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।অতঃপর আমাদের ভিতরের সুপ্ত মানবতাবোধ এবং মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করতে হবে। পথশিশুদের অধিকার আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সমাজের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ ও
সচেতন নাগরিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি, পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা,
সরকারি-বেসরকারি সংগঠনগুলোকেও পথশিশুদের জন্য টেকসই বাসস্থান নির্মাণসহ যাবতীয় অধিকার
নিশ্চিত করতে হবে।তাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন করার ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে হবে। সবাই মিলে পথশিশুদের একটি সুন্দর স্বাভাবিক জীবন উপহার দিতে হবে।আর তারাও যেন একজন মানুষ হিসেবে এই সমাজে বাঁচতে পারে। আর এই অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন ঘটুক- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।আর লক্ষ্যেই আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নড়াইলে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে স্কুল শিক্ষিকাকে হত্যা !

পথশিশুদের নিয়ে একদল মেধাবী তরুণ শিক্ষার্থীদের নতুন সম্ভাবনা

Update Time : ০৬:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ড. এম আই পাটোয়ারী ২নং হলের এক ঝাক তরুন শিক্ষার্থীর পথশিশু সেবার উদ্দেশ্যে “লালটাই কমিউনিটি নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মোড়ক উন্মোচন ” এবং ১১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির সাধারণ সভায় সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে এ কমিটি গঠন করা হয়। রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে সভা চলে রাত বারোটা পর্যন্ত। এর আগে গত ১৬ আগস্ট খালিদ হাসান টিটোকে সভাপতি ও নিরব খন্দকারকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি গঠন করা হয়।

পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যরা হলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক
ইমতিয়াজ সিদ্দিক, শৃঙ্খলা বিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ হুসাইন,মোরশেদুল মুরাদ,ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি সবুজ মন্ডল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সায়মুন সজিব,মিডিয়া সেক্রেটারি অমিত সরকার আয়ান,প্রচার সম্পাদক শাওন বিশ্বাস, ক্রীড়া সম্পাদক মাহফুজ হক আতিক, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক খালিদ হাসান সাফি।

লক্ষ্য

সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বাল্য বিহাহ প্রতিরোধে বিশেষ ভুমিকা রাখা, সামাজিক, মানবিক ও মানসিক বিকাশে শিশুদের অগ্রধিকার প্রতিষ্ঠা করা, বিশেষ করে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব প্রদানের সক্ষমতা তৈরী করাই হলো মূল লক্ষ্য।

উদ্দেশ্য
লালটাই কমিউনিটি ক্লাব এমন একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে সারা বাংলাদেশের সকল শিশুরা তাদের প্রতিভা বিকাশে সতস্ফুর্তভাবে সরাসরি অংশগ্রণ করতে পারে। পাশাপাশি শিশুদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনার কৌশল, সামাজিক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা ও বাস্তবায়ন কৌশল, বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানে দক্ষতা অর্জনে স্থায়ী ও বিশস্ত সংগঠন হিসেবে কাজ করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

লালটাই কমিউনিটি ক্লবের সভাপতি খালিদ হাসান টিটো বলেন
শিশু আর পথশিশু শব্দ দুটি আলাদা মনে হলেও শিশু আর পথশিশুর মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। যদিও তারা রাস্তায় জীবন-যাপন করার কারণে পরিচিত হয় পথশিশু নামে। আর মানুষের মানবতা এবং মনুষ্যত্ব দিন দিন হ্রাস পাওয়ায় আমাদের দেশে পথশিশুর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। এর জন্য সুশিক্ষা ও সচেতনতার বড়ই অভাব। হ্যাঁ, একশ্রেণির অশিক্ষিত ও দরিদ্র মানুষ অপরিকল্পিতভাবে সন্তান জন্ম দিয়ে নির্দিষ্ট সময় পর তাদেরকে পরিত্যাগ করে। আর সন্তানদের রোজগারের জন্য মারধর করে থাকে। ফলে শুরু হয় তাদের অবহেলিত কষ্টের জীবন। পথশিশুদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কচি, কোমল মুখগুলো পরিচিত হয় নতুন নতুন অনেক অসহনীয় অভিজ্ঞতার সঙ্গে। কঠিন বাস্তবতার কারণে একসময় তারাই হয়ে ওঠে সমাজের নেশাখোর, ছিনতাইকারী, চোর ইত্যাদি। আর ছোট ছোট বাচ্চারা রাস্তায় পত্রিকা বিক্রি করে, ফুল বিক্রি করে কিংবা কিছু খাবে বলে টাকা চায়। তাদের ভবিষ্যত কী হবে যে বয়সে তাদের হাতে থাকা উচিৎ বই-খাতা। সে বয়সে তাদের হাতে থাকে প্লাস্টিকের বস্তা! রাস্তায় রাস্তায় তারা প্লাস্টিক খুঁজে। কি নির্মম বেদনাদায়ক দৃশ্য!
অতএব, এই পথশিশুদের থাকা-খাওয়া এবং পড়াশোনার মাধ্যমে অন্যান্য বাচ্চাদের মতো স্বাভাবিক জীবন-যাপন করার, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার ব্যবস্থা এবং তাদের ইচ্ছে ও স্বপ্নকে পূরণ করার সুযোগ করার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। ভালো গাইড লাইন দিতে হবে। তাহলেই একদিন পথশিশু নামক কোনো নাম শিশুর সঙ্গে যুক্ত হবে না। দেশ থেকে মুছে যাবে পথশিশু নামক শব্দটি। আর তারাও ফিরে পাবে স্বাভাবিক জীবন। শিশু থাকবে শিশুর মতোই।

লালটাই কমিউনিটি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিরব খন্দকার বলেন
পরিবেশ-পরিস্থিতি, পারিবারিক অস্বচ্ছতা ও রাষ্ট্রের দায়িত্বহীনতার কারণে ক্রমশ পথশিশুদের পরিসংখ্যান দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। একদিক থেকে মানবতা এবং মনুষ্যত্ব হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে পথশিশুদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।অতঃপর আমাদের ভিতরের সুপ্ত মানবতাবোধ এবং মনুষ্যত্বকে জাগ্রত করতে হবে। পথশিশুদের অধিকার আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সমাজের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ ও
সচেতন নাগরিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি, পথশিশুদের নিয়ে কাজ করা,
সরকারি-বেসরকারি সংগঠনগুলোকেও পথশিশুদের জন্য টেকসই বাসস্থান নির্মাণসহ যাবতীয় অধিকার
নিশ্চিত করতে হবে।তাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন করার ক্ষেত্র তৈরি করে দিতে হবে। সবাই মিলে পথশিশুদের একটি সুন্দর স্বাভাবিক জীবন উপহার দিতে হবে।আর তারাও যেন একজন মানুষ হিসেবে এই সমাজে বাঁচতে পারে। আর এই অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন ঘটুক- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।আর লক্ষ্যেই আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।