নিজস্ব প্রতিনিধি খুলনা।।
খুলনায় গণসংহতি আন্দোলনের সমাবেশে মুনীর চৌধুরী সোহেল বলেন, বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিন, রেশন ব্যবস্থা চালু করুন গ্রাম- শহরে বাজার সিন্ডিকেট ভাঙ্গা, রেশনিং ব্যবস্থা চালুর দাবিতে ও চাল- ডাল- ভোজ্যতেল- চিনি-পেঁয়াজ- ডিম- গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা কমিটির উদ্যোগে অদ্য ২০অক্টোবর (রবিবার) বেলা ১১টায় নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে জেলা আহবায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেলের সভাপতিত্বে এবং জেলা সদস্য আল আমিন শেখ এর সঞ্চালনায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা যুগ্ম আহবায়ক মোঃ অলিয়ার রহমান শেখ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) খুলনা মহানগর সভাপতি খান লোকমান হাকিম, জেলা সাধারণ সম্পাদক স,ম, রেজাউল করীম, নাগরিক ঐক্য খুলনা মহানগর সদস্য সচিব কাজী মোতাহার রহমান বাবু, গণসংহতি আন্দোলন জেলা সদস্য টিপু সুলতান, নাদিরা খাতুন, নাগরিক ঐক্য মহানগর সদস্য মোস্তাকুজ্জামান, গণসংহতি আন্দোলন অভয়নগর উপজেলার সংগঠক সামস সারফিন সামন, সচেতন নাগরিক সমাজ খুলনা জেলা সভাপতি শাহ মোঃ অহিদুজ্জামান, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন খুলনা মহানগর সম্পাদক সাগর চ্যাটার্জী, অর্থ সম্পাদক শেখ মোঃ মেহেদী, ক্রিসেন্ট জুটমিল কারখানা কমিটির সহ-সভাপতি মোশারেফ হোসেন, স্টার জুটমিল শ্রমিকনেতা মোঃ আলমগীর হোসেন, জেজেআই শ্রমিকনেতা আলতাফ হোসেন, মোঃ ওমর আলী প্রমূখ।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে মুনীর চৌধুরী সোহেল বলেন, গ্রাম- শহরে নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন লেগেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম লাগামহীন উর্ধ্বগতির ফলে নিম্নবিত্তসহ মধ্যবিত্তের জীবনে নাভিশ্বস উঠেছে। করোনার সময়কালে বহু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। অসংখ্য মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। বহুজনের বেতন কর্তন করা হয়েছে। করোনা মহামারীর সুযোগে বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার প্রধান একযোগে ২৬টি পাটকল বন্ধ করে দেওয়ায় ৭০হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে পথে নামতে বাধ্য হয়। পাটসংশ্লিষ্ট প্রায় ৩কোটি মানুষ বেকার হয়ে পড়ে। মুনীর চৌধুরী আরো বলেন, বৃহৎ মুনাফালোভী লুটেরা ব্যবসায়ীরা দুঃশাসক আওয়ামী শাসনকালে বাজার সিন্ডিকেটের শেকড় গেড়ে বসে ছিলো। চরম স্বৈরাচার সরকারের পতন হলেও বর্তমানে বাজার সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী দোসররা বাজারের ওপর এক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে রেখেছে।
এই লুণ্ঠক ব্যবসায়ীরা এখনো মানুষের জীবন ত্রাহি অবস্থায় ফেলে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হচ্ছেন। অথচ অন্তবর্তীকালীন সরকারের বয়স প্রায় দুই মাসের অধিক হলেও সিন্ডিকেট ভাংতে পারছেন না। খেটে খাওয়া মানুষের জীবন- জীবিকা স্থিতিশীল রাখতে অতি দ্রুত পণ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্য রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। গ্রাম থেকে শহরে পণ্য আনতে চাদাঁবাজির যে নৈরাজ্য চলে, চাতাল ও মিলমালিকরা যে কারসাজি করে দাম বৃদ্ধি করে গণমানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সারাদেশে অনিয়ন্ত্রিত বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার পাশাপাশি গণমানুষের জন্য রেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন জরুরী হয়ে পড়েছে।
জনগণের ট্যাক্সের টাকায় রাষ্ট্র পরিচালিত হলেও শ্রমিক-কৃষক- মজুর- নিম্ন আয়ের মানুষসহ মধ্যবিত্তরা রেশন সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ রাষ্ট্রের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী, সামরিক বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ, বিজিবি, আনসার এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ মোট ১০টি রাষ্ট্রীয় সংস্থা রেশন সুবিধা পেয়ে আসছে। অস্থির বাজার ব্যবস্থা অবসান ঘটালে হলে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য রেশনব্যবস্থা চালু করাও জরুরী। সমাবেশে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, বিগত জুলাই আগস্ট মাসে ছাত্র- শ্রমিক- জনতার অভ‚ তপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের আবির্ভাব ঘটেছে, একারণে সরকারের ওপর জনমানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ প্রবলভাবে ঘটছে না।
কারণ অন্তর্বতীকালীন সরকারের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা আছে যে,এই সরকার জন-আকাঙখা পূরণ করবে। জন- মানুষের গণক্ষোভ যেন বিষ্ফোরিত না হয় সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।