ঢাকা ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের অতিথিকক্ষে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার- অভিযোগ

বাংলাদেশ জনপদ ডেস্ক :

চোর সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে আটকে রেখে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে একদল শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় মারধরে অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। গতকাল দিবাগত রাত ১২ টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল বলে জানা গেছে। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন। লাশটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ অদ্য ১৯ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বেস কিছু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ফজলুল হক মুসলিম হলে পিটিয়ে একটি হত্যার ঘটনা শোনার পর ভোরেই আমি প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। সেখানে মর্গে থাকা ব্যক্তি মৃত্যুর ঘটনা জানিয়েছে। ইতিমধ্যে আমার টিমের একজন শাহবাগ থানায় গিয়েছেন এ বিষয়ে মামলা করার জন্য।’

অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি ফজলুল হক মুসলিম হলে প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের জন্য বলেছি। সেগুলো দেখে কারা দোষী, তা শনাক্ত করা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টাকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের একটি সূত্র জানায়, মুঠোফোনচোর সন্দেহে গতকাল সন্ধ্যার পর ওই ব্যক্তিকে ফজলুল হক হলের অতিথিকক্ষে ধরে এনে রাত ১০ টা পর্যন্ত দফায় দফায় মারধর করা হয়। এর একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিকে হলের ক্যানটিনে রাতের খাবার খাইয়ে আবারও মারধর করেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা।

চোর সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তিকে ফজলুল হক হলে ভেতরে ধরে আনার বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়েছিলেন এক শিক্ষার্থী।

এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে রাত ১০ টার দিকে আবাসিক শিক্ষকেরা হলে যান বলে জানান হলের এক শিক্ষার্থী। পরে দিবাগত রাত ১২ টার দিকে আহত ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেখানে চিকিৎসক ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল থেকে চলে যান।

গতকাল মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের পিটুনিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ফেসবুক গ্রুপ ও নিজেদের ব্যক্তিগত প্রোফাইলে দেওয়া বিভিন্ন পোস্টে শিক্ষার্থীদের অনেকেই বিচারবহির্ভূত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কিছু শিক্ষার্থী আজ ভোরে টিএসসি এলাকায় বিক্ষোভও করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নড়াইলে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে স্কুল শিক্ষিকাকে হত্যা !

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের অতিথিকক্ষে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার- অভিযোগ

Update Time : ০৭:২৯:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ জনপদ ডেস্ক :

চোর সন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথিকক্ষে আটকে রেখে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে একদল শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় মারধরে অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। গতকাল দিবাগত রাত ১২ টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল বলে জানা গেছে। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন। লাশটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ অদ্য ১৯ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বেস কিছু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ফজলুল হক মুসলিম হলে পিটিয়ে একটি হত্যার ঘটনা শোনার পর ভোরেই আমি প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। সেখানে মর্গে থাকা ব্যক্তি মৃত্যুর ঘটনা জানিয়েছে। ইতিমধ্যে আমার টিমের একজন শাহবাগ থানায় গিয়েছেন এ বিষয়ে মামলা করার জন্য।’

অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি ফজলুল হক মুসলিম হলে প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের জন্য বলেছি। সেগুলো দেখে কারা দোষী, তা শনাক্ত করা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টাকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের একটি সূত্র জানায়, মুঠোফোনচোর সন্দেহে গতকাল সন্ধ্যার পর ওই ব্যক্তিকে ফজলুল হক হলের অতিথিকক্ষে ধরে এনে রাত ১০ টা পর্যন্ত দফায় দফায় মারধর করা হয়। এর একপর্যায়ে ওই ব্যক্তিকে হলের ক্যানটিনে রাতের খাবার খাইয়ে আবারও মারধর করেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা।

চোর সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তিকে ফজলুল হক হলে ভেতরে ধরে আনার বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়েছিলেন এক শিক্ষার্থী।

এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে রাত ১০ টার দিকে আবাসিক শিক্ষকেরা হলে যান বলে জানান হলের এক শিক্ষার্থী। পরে দিবাগত রাত ১২ টার দিকে আহত ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেখানে চিকিৎসক ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল থেকে চলে যান।

গতকাল মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের পিটুনিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ফেসবুক গ্রুপ ও নিজেদের ব্যক্তিগত প্রোফাইলে দেওয়া বিভিন্ন পোস্টে শিক্ষার্থীদের অনেকেই বিচারবহির্ভূত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কিছু শিক্ষার্থী আজ ভোরে টিএসসি এলাকায় বিক্ষোভও করেছেন।