ঢাকা ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর : বুধবার হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু, দেবীর আবাহন, অধিবাস, বোধন এবং মহাষষ্ঠীবিহীত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। আগামী ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসব। এদিকে দুর্গাপূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশের পূজামণ্ডপগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণাঢ্য সাজে। সারা দেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। মণ্ডপের সামনে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ। ঢাক-ঢোল, কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ। আগামীকাল ( ০৯ অক্টোবর ) বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে দুর্গা দেবীর বোধন। শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরুতে দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙাতে ভক্তরা বোধন ও বন্দনা পূজা করবেন।বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে দুর্গাপূজা বারোয়ারি বা কমিউনিটি পূজা হিসেবে হিন্দুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, ষষ্ঠী তিথির সন্ধ্যায় ধূপের ধোঁয়া, ঊলুধ্বনি, ঢাক-ঢোল-কাঁসর-মন্দিরের চারদিক কাঁপানো শব্দ আর পুরোহিতদের কণ্ঠে-যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’ মন্ত্রোচ্চারণের ভেতর দিয়ে দূর কৈলাস ছেড়ে দেবী পিতৃগৃহে আসেন।পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। বসন্তে তিনি এ পূজার আয়োজন করেন। এজন্য দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের এ পূজাকে ‘অকাল বোধন’ বলা হয়।বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে।এদিকে পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা নিয়োজিত আছে বলে রংপু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।রংপুরের কালী বাড়ি, ধর্মসভাসহ বিভিন্ন মণ্ডপে দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ,হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিককে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নড়াইলে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে স্কুল শিক্ষিকাকে হত্যা !

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব

Update Time : ০৪:২৬:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর : বুধবার হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু, দেবীর আবাহন, অধিবাস, বোধন এবং মহাষষ্ঠীবিহীত পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। আগামী ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ উৎসব। এদিকে দুর্গাপূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশের পূজামণ্ডপগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণাঢ্য সাজে। সারা দেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। মণ্ডপের সামনে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ। ঢাক-ঢোল, কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ। আগামীকাল ( ০৯ অক্টোবর ) বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে দুর্গা দেবীর বোধন। শারদীয় দুর্গোৎসবের শুরুতে দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙাতে ভক্তরা বোধন ও বন্দনা পূজা করবেন।বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে দুর্গাপূজা বারোয়ারি বা কমিউনিটি পূজা হিসেবে হিন্দুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, ষষ্ঠী তিথির সন্ধ্যায় ধূপের ধোঁয়া, ঊলুধ্বনি, ঢাক-ঢোল-কাঁসর-মন্দিরের চারদিক কাঁপানো শব্দ আর পুরোহিতদের কণ্ঠে-যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেণ সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’ মন্ত্রোচ্চারণের ভেতর দিয়ে দূর কৈলাস ছেড়ে দেবী পিতৃগৃহে আসেন।পূরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা করেন। বসন্তে তিনি এ পূজার আয়োজন করেন। এজন্য দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লংকা যাত্রার আগে রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের এ পূজাকে ‘অকাল বোধন’ বলা হয়।বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার দোলায় (পালকি) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যলোকে (পৃথিবী) আসবেন। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন ঘোড়ায় চড়ে।এদিকে পূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা নিয়োজিত আছে বলে রংপু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাবের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।রংপুরের কালী বাড়ি, ধর্মসভাসহ বিভিন্ন মণ্ডপে দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ,হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে দেশের সব নাগরিককে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।