ঢাকা ০৩:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রংপুরের সব স্থানে চলছে পলিথিনের অবাধ ব্যবহার

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর

দেশব্যাপী পলিথিনের ব্যবহার, ক্রয় ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে পাত্তা না দিয়ে রংপুরের সব স্থানে চলছে পলিথিনের অবাধ ব্যবহার। তবে সুপারশপ গুলোতে ঘুরে দেখা যায়, তারা মেনে চলছে সরকারের এই নির্দেশনা। অদ্য (০৪ নভেম্বর) সোমবার রংপুরের সিটি বাজার, স্টেশন বাজার, লালবাগ বাজারসহ বিভিন্ন বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিকভাবে আগের মতোই পলিথিন বিক্রি ও ব্যবহার করতে।

অন্তবর্তী সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গত ৯ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিলেন ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে কোনো পলিথিন বা পলি প্রপাইলিনের ব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না। বিকল্প হিসেবে কাগজ, পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ক্রেতাদের দিতে হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ১ নভেম্বর থেকে খুচরা বাজারেও এসব ব্যাগ ব্যবহার নিষেধ। যা পরবর্তীতে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সুপারশপ গুলোতে সরকারের ওই নির্দেশনা মেনে চললেও ঘোষণা অনুযায়ী খুচরা বাজারে পলিথিন ব্যাগ বন্ধের চেষ্টা করছে সরকার।

কিন্তু বাজারে পলিথিন চলছে অগাধে। রংপুরের সিটিবাজার, লালবাগ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের মতোই ব্যবহার ও বিক্রি হচ্ছে পলিথিন। অনেকে দোকানে লুকিয়ে রেখেছেন, কেউবা আবার প্রকাশ্যে ব্যবহার ও বিক্রি করছেন। ছোট, বড় বা মাঝারি দোকানের অনেকেই পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না।তাদের ভাষ্য, পলিথিন ব্যাগের বিকল্প সামগ্রী ব্যয়বহুল।

একই সঙ্গে পাটের বা কাপড়ের ব্যাগ সহজলভ্য না। এ বিষয়ে লালবাগ বাজারের তরকারি বিক্রেতা নাজিম বলেন, পলিথিন বন্ধ হলে আমরাও কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করতে পারব। কারখানায় পলিথিন তৈরি বন্ধ না করতে পারলে এটা বাজারে এসে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা যাবে না।একই বাজারে কেনাকাটা করতে আসা টিটু বলেন, বিকল্প তৈরি না করেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় আমরা বিপাকে পড়েছি। তবে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।এদিকে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে বাজারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এবার পলিথিন বন্ধে আর ছাড় দেওয়া হবে না এমনই বার্তাও দিচ্ছেন সরকার।অনেকে বলছে, বাজারে গিয়ে পলিথিন খুঁজে বের করে সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করা কোনো পদ্ধতি হতে পারে না। কারণ, বাজারে পলিথিন কোথায় থেকে আসে? এর উৎপাদন যে জায়গায় হয়, যারা উৎপাদন করেন, তাদের যদি দৃষ্ঠান্তমূলক আর্থিক জরিমানা করা যায়, তাহলে পলিথিন বাজারে আসবে না বা ব্যবহারো হবে না।পলিথিনের শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুরে গঠিত কমিটি বাজারে মনিটরিং করছে।

মনিটরিং কমিটির সদস্যরা বাজার করতে আসা মানুষকে পলিথিন এর ব্যবহার না করে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহারের অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে দোকানিদের পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধে নির্দেশনা দেন। পরবর্তী অভিযানে পলিথিনের ব্যাগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তারা।

এ ব্যপারে রংপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছি। এ সময় আমরা লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছি। আশা করছি সামনে পজেটিভ রেজাল্ট হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

রংপুরের সব স্থানে চলছে পলিথিনের অবাধ ব্যবহার

Update Time : ০১:১৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ নভেম্বর ২০২৪

রিয়াজুল হক সাগর, রংপুর

দেশব্যাপী পলিথিনের ব্যবহার, ক্রয় ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে পাত্তা না দিয়ে রংপুরের সব স্থানে চলছে পলিথিনের অবাধ ব্যবহার। তবে সুপারশপ গুলোতে ঘুরে দেখা যায়, তারা মেনে চলছে সরকারের এই নির্দেশনা। অদ্য (০৪ নভেম্বর) সোমবার রংপুরের সিটি বাজার, স্টেশন বাজার, লালবাগ বাজারসহ বিভিন্ন বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিকভাবে আগের মতোই পলিথিন বিক্রি ও ব্যবহার করতে।

অন্তবর্তী সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গত ৯ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিলেন ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে কোনো পলিথিন বা পলি প্রপাইলিনের ব্যাগ ব্যবহার করা যাবে না। বিকল্প হিসেবে কাগজ, পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ক্রেতাদের দিতে হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ১ নভেম্বর থেকে খুচরা বাজারেও এসব ব্যাগ ব্যবহার নিষেধ। যা পরবর্তীতে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সুপারশপ গুলোতে সরকারের ওই নির্দেশনা মেনে চললেও ঘোষণা অনুযায়ী খুচরা বাজারে পলিথিন ব্যাগ বন্ধের চেষ্টা করছে সরকার।

কিন্তু বাজারে পলিথিন চলছে অগাধে। রংপুরের সিটিবাজার, লালবাগ বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ের মতোই ব্যবহার ও বিক্রি হচ্ছে পলিথিন। অনেকে দোকানে লুকিয়ে রেখেছেন, কেউবা আবার প্রকাশ্যে ব্যবহার ও বিক্রি করছেন। ছোট, বড় বা মাঝারি দোকানের অনেকেই পলিথিন নিষিদ্ধের বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না।তাদের ভাষ্য, পলিথিন ব্যাগের বিকল্প সামগ্রী ব্যয়বহুল।

একই সঙ্গে পাটের বা কাপড়ের ব্যাগ সহজলভ্য না। এ বিষয়ে লালবাগ বাজারের তরকারি বিক্রেতা নাজিম বলেন, পলিথিন বন্ধ হলে আমরাও কাগজের ঠোঙা ব্যবহার করতে পারব। কারখানায় পলিথিন তৈরি বন্ধ না করতে পারলে এটা বাজারে এসে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা যাবে না।একই বাজারে কেনাকাটা করতে আসা টিটু বলেন, বিকল্প তৈরি না করেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় আমরা বিপাকে পড়েছি। তবে আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।এদিকে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে বাজারে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এবার পলিথিন বন্ধে আর ছাড় দেওয়া হবে না এমনই বার্তাও দিচ্ছেন সরকার।অনেকে বলছে, বাজারে গিয়ে পলিথিন খুঁজে বের করে সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করা কোনো পদ্ধতি হতে পারে না। কারণ, বাজারে পলিথিন কোথায় থেকে আসে? এর উৎপাদন যে জায়গায় হয়, যারা উৎপাদন করেন, তাদের যদি দৃষ্ঠান্তমূলক আর্থিক জরিমানা করা যায়, তাহলে পলিথিন বাজারে আসবে না বা ব্যবহারো হবে না।পলিথিনের শপিং ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুরে গঠিত কমিটি বাজারে মনিটরিং করছে।

মনিটরিং কমিটির সদস্যরা বাজার করতে আসা মানুষকে পলিথিন এর ব্যবহার না করে পাট ও কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহারের অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে দোকানিদের পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার বন্ধে নির্দেশনা দেন। পরবর্তী অভিযানে পলিথিনের ব্যাগ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তারা।

এ ব্যপারে রংপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছি। এ সময় আমরা লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছি। আশা করছি সামনে পজেটিভ রেজাল্ট হবে।