ঢাকা ০৩:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের তিন দফা দাবিতে- সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশ জনপদ ডেস্ক :

আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধান’সহ তিন দফায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর সংবাদ সম্মেলন করেন। অদ্য ২৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৫ টায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগ নিষেদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ।

সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ৩ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।

  1. আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধান করে তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে এবং গত ১৫ বছরে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সংগঠিত সমস্ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
  2. মহান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে সংগঠিত প্রত্যেকটি ছাত্র হত্যার বিচার নিশ্চিতে বিশেষ কমিশন গঠন করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
  3. জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে ও শহীদ পরিবারের পূনর্বাসন নিয়ে যে দীর্ঘসূত্রীতা তৈরি হয়েছে তা দ্রুত নিরসন করতে হবে এবং শহীদদের পূর্নাঙ্গ তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, “বিগত ১৫ বছরের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল-গুলোতে গণরুম-গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, সারারাত ধরে পিটিয়ে ছাত্র হত্যা, ধর্ষণসহ এমন হেন কোন অপরাধ নাই যার সাথে ছাত্রলীগ জড়িত নয়। সারাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনেও সবসময় প্রধান লাঠিয়ালের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছিলো ছাত্রলীগ।

তাদের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে সকল ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারই ধারাবিাহিকতায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমাতে সংগঠিত গণহত্যার প্রধান অংশীদারে পরিণত হয় ছাত্রলীগ। হাজারো মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। জনগণের মাঝে এই গণহত্যায় অংশ নেয়া সকলের বিচার নিশ্চিত করা ও গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আকাঙ্খা তৈরী হয়েছে।এমতাবস্থায় অন্তবর্তীকালিন সরকার নির্বাহী আদেশে গতকাল ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।এই মুহুর্তে এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা থাকলেও আমরা মনে করি ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধান করে তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ফারহানা মুনা, ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আল-আমিন রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্পাদক সাকিবুর রনি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান, ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি তুহিন ফরাজীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ প্রমূখ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের তিন দফা দাবিতে- সংবাদ সম্মেলন

Update Time : ০৪:০৪:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশ জনপদ ডেস্ক :

আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধান’সহ তিন দফায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর সংবাদ সম্মেলন করেন। অদ্য ২৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৫ টায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে নির্বাহী আদেশে ছাত্রলীগ নিষেদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ডের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ।

সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ৩ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়।

  1. আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধান করে তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে এবং গত ১৫ বছরে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সংগঠিত সমস্ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
  2. মহান মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে সংগঠিত প্রত্যেকটি ছাত্র হত্যার বিচার নিশ্চিতে বিশেষ কমিশন গঠন করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
  3. জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে ও শহীদ পরিবারের পূনর্বাসন নিয়ে যে দীর্ঘসূত্রীতা তৈরি হয়েছে তা দ্রুত নিরসন করতে হবে এবং শহীদদের পূর্নাঙ্গ তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে তাদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড বলেন, “বিগত ১৫ বছরের দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল-গুলোতে গণরুম-গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, সারারাত ধরে পিটিয়ে ছাত্র হত্যা, ধর্ষণসহ এমন হেন কোন অপরাধ নাই যার সাথে ছাত্রলীগ জড়িত নয়। সারাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনেও সবসময় প্রধান লাঠিয়ালের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছিলো ছাত্রলীগ।

তাদের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে সকল ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তারই ধারাবিাহিকতায় ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দমাতে সংগঠিত গণহত্যার প্রধান অংশীদারে পরিণত হয় ছাত্রলীগ। হাজারো মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। জনগণের মাঝে এই গণহত্যায় অংশ নেয়া সকলের বিচার নিশ্চিত করা ও গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার আকাঙ্খা তৈরী হয়েছে।এমতাবস্থায় অন্তবর্তীকালিন সরকার নির্বাহী আদেশে গতকাল ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।এই মুহুর্তে এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা থাকলেও আমরা মনে করি ছয় মাসের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে বিচারিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার স্থায়ী সমাধান করে তাকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মাঝে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ফারহানা মুনা, ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আল-আমিন রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্পাদক সাকিবুর রনি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান, ঢাকা মহানগর শাখার সহ-সভাপতি তুহিন ফরাজীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ প্রমূখ।