স্টাফ রিপোর্টার
ভোলা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে টাকা ছাড়া কোনো সেবা মিলে না। সরকারি ওষুধ সরবরাহ থাকার পরেও চিকিৎসকরা সেবা প্রার্থীদের বাইরে থেকে নির্ধারিত কোম্পানির ওষুধ কিনতে বাধ্য করছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, মাঠ পর্যায়ে প্রজনন কর্মী ও ভেটেরিনারি ফিল্ড অ্যাসিস্টেন্টদের (ভিএফএ) চাঁদাবাজিসহ নানা অনিয়মের কারণে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে এখন আর সেবার জায়গা নেই। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হলে পশু মালিকদের ৫’শত থেকে ১’হাজার টাকা দিতে হয়। আর সরকারি পঞ্চাশ টাকার ভ্যাকসিন দিয়ে ২’শত টাকা থেকে ৩শ’ টাকা আদায় করা হয়। আবার অনেকে পশু নিয়ে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা না পেয়ে অসুস্থ পশু নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
গেল ২৬ অক্টোবর সকালে শাহিক সিরাজ হাওলাদার নামের এক প্রান্তিক খামারি ভোলা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে একটি বকনা বাছুর নিয়ে যান। বাছুরটি হানিয়া রোগে আক্রান্ত ছিল। এ সময় অফিসের উপসহকারী প্রাণিসম্পদ অফিসার (প্রাণিস্বাস্থ্য) আলাউদ্দিন বাবুল তার কাছে বাছুরটির হানিয়া অপারেশন করার জন্য ৪ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আলাউদ্দিন বাবুল ও তার সহযোগী সালাউদ্দিন আহমেদ তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। কোনো উপায়ন্তর না পেয়ে তিনি তাদেরকে অনেক বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করে ১ হাজার টাকা দেন।
প্রাণিসম্পদ অফিসার আলাউদ্দিন বাবুলের বিরুদ্ধে আনীত এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা না বলে তাড়াহুড়ো করে অফিসকক্ষ থেকে বের হয়ে চলে যান।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ শাহিন মাহমুদ বলেন, আলাউদ্দিন বাবুলের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।
আর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোলা সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরে টাকা ছাড়া পশুর সেবা মিলছে না এমন ঘটনা আমি এই প্রথম শুনেছি। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শুধু আলাউদ্দিন বাবুল নয়। ভোলা পশু হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত বলে জানান খামারিরা। প্রান্তিক খামারিদের দাবি, ভোলার প্রতিটি প্রাণিসম্পদ অফিসে যেনো পশুর ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়।