আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য পেশাগত দায়িত্বে ফিরতে চান রংপুর রেঞ্জ ও মহানগর পুলিশ। এ জন্য রংপুরবাসীকে পুলিশ বাহিনীর পাশে থেকে সহযোগিতা করতে আকুল আবেদন জানিয়েন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আবদুল বাতেন ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান।সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুুলিশের উর্ধ্বতন এই দুই কর্মকর্তা জানান, ‘বর্তমান অবস্থায় হতাশায় মনোবল ভেঙে গেছে মাঠ পর্যায়ের পুলিশের। তাদের মধ্যে সংশয় ও ভীতি কাজ করছে। তাই সাংবাদিক ও রংপুরবাসী যদি আমাদের মেেনাবল দেন, সাহস দেন, অভয় দেন, আমরা রংপুরবাসীকে সেবা দিতে পারবো। এই মূহুর্তে সহযোগিতা ছাড়া নাগরিক সেবা দিতে পারছি না। কেননা আমরা বাইরে গিয়ে আক্রান্ত হলে, নাগরিকদের সেবা কিভাবে দিবো? আমাদের কর্মপরিবেশ তৈরি করে দেন, আমরা যেন লাঞ্ছিত না হই।বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে পৃথক দুটি সংবাদ সম্মেলনে রংপুরবাসীর প্রতি এই আহবান জানান রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার।রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আবদুল বাতেন বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্রজনতার জয় হয়েছে। সেই জয়ে রাষ্ট্রের সব কাঠামোয় সংস্কার হবে সবাই প্রত্যাশা করে। আমরাও এই বৈষম্য সংস্কারে পুলিশের মধ্যে বৈষম্যের সংস্কার চাই। মাঠ পর্যায়সহ পুলিশসদস্যরা কয়েকদফা দাবি উপস্থাপন করেছে। দাবিগুলো যৌক্তিক। সরকার গঠন হলে, উপয্ক্তু মাধ্যমে সেই দাবীগুলো উপস্থাপন করা হবে।তিনি আরও জানান, তার অধীনস্থ রংপুর বিভাগের আট জেলায় কোথাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কোন শিক্ষার্থী কিংবা জনতা অথবা পুলিশ সদস্য মারা যায়নি। তবে অনেকে আহত হয়েছে। আমাদের ১২২ জন পুলিশ সদস্য আহত রয়েছে। সেই সাথে পুলিশ লাইন্স, থানা, ফাঁড়ি ভাংচুর ও অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব কাটিয়ে উঠে দেশ গঠনে ও নাগরিক সেবা দিতে আবারো তিনি রংপুরবাসী ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।এদিকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, অনেক কষ্ট, দুঃখ হৃদয় নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আমাদের সব অফিসাররা উপস্থিত হয়েছে। আমরা ব্যথিত, আমরা দুঃখিত। রংপুরে অনেক অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। হয়তো আরও ঘটনা ঘটতে পারত কিন্তু আমরা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কথা বলেছি এবং তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে। তাদের সহযোগিতার কারণে রংপুরে আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন বর্তমানে পুলিশের কর্মবিরতি চলছে, এই সুযোগে কোনো সুযোগসন্ধানী যেন কারো ক্ষতি কিংবা লুটপাট করতে না পারে। সেজন্য আমরা সকলের সহযোগিতা চাই। ইতোমধ্যে যে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি, ইসলামি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা হয়েছে, সেই সাথে একটি কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও চলছে। আমরা আশা করছি দ্রুত এই সংকট কেটে যাবে। সরকার শপথ নেয়ার সাথে সাথে যে শুন্যতা রয়েছে তা কেটে যাবে বলে প্রত্যাশাও করেন তিনি।বেলা সোয়া ২টায় রংপুর জেলা পুলিশ কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- রংপুর রেঞ্জের অ্যাডিশনাল ডিআইজি (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিন্যান্স) এস এম রশিদুল হক, অ্যাডিশনাল ডিআইজি (অপারেশনস) পংকজ চন্দ্র রায়, পুলিশ সুপার (ট্রাফিক অ্যান্ড অপারেশনস) মোঃ হুমায়ুন কবির, রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) সুলতানা রাজিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোঃ ইফতে খায়ের আলম প্রমুখ।অন্যদিকে বিকেল সাড়ে ৩টায় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সভাকক্ষের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ সায়ফুজ্জামান ফারুকী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস্) উত্তম কুমার পাল, উপ-পুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) মোঃ আবু বকর সিদ্দীক, উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা বিভাগ) কাজী মুত্তাকী ইবনু মিনান, উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মো: আবু মারুফ হোসেন, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ মেনহাজুল আলম, সহকারী পুলিশ কমিশনার ((ট্রাফিক – উত্তর বিভাগ), অতিরিক্ত দায়িত্বে সহকারী পুলিশ কমিশনার (স্টাফ অফিসার) জয়ন্ত কুমার সেন প্রমুখ।
সর্বশেষ :
সহযোগিতা চাইলেন রংপুরের পুলিশের ডিআইজি ও কমিশনার
- রিয়াজুল হক সাগর,রংপুর।
- Update Time : ০৪:০৫:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০২৪
- ১৯ Time View
Tag :
জনপ্রিয় সংবাদ