ঢাকা ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বয়ঃসন্ধিকালীন নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক কর্মশালা ও ঘূর্ণিঝড় রিমেল এ ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ 

আশিকুর রহমান শান্ত, ভোলা : ভোলায় বয়ঃসন্ধিকালীন নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক কর্মশালা ও ঘূর্ণিঝড় রিমেল এ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে পরশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’র আয়োজনে ত্রাণ বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ১০ টায় শহরের চরনোয়াবাদ এলাকায় ওবায়দুল হক বাবুল মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভোলা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইউনুছ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ এর নিবার্হী অফিসার সজল চন্দ্র শীল, ভোলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোলা আবৃত্তি সংসদ এর সভাপতি সামস্ উল আলম মিঠু, ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ এর ভাইস চেয়ারম্যান শাহ্ আলী নেওয়াজ পলাশ, উপজেলা পরিষদ এর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছালেহা আক্তার চৌধুরী, দৈনিক ভোলার বানী এর সম্পাদক মাকসুদুর রহমান ও অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কাশেম এবং পরশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা এর সভাপতি মাহাবুবা ইসলাম সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

এ সময় অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে বাংলাদেশের নারীদের মাঝে সচেতনতা বেড়েছে। শুধু শহরাঞ্চলেই নয়, প্রত্যন্ত গ্রামেও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বেড়েছে এ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সচেতনতা। এখন অনেক কিশোরীই স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা ফার্মেসি থেকে স্যানেটারি ন্যাপকিনসহ তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করছে।

সদর উপজেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইউনুছ তার বক্তব্যে বলেন, সরকার দেশজুড়ে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে চিকিৎসাসেবা। নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতার ফলে এখন মা ও শিশুর মৃত্যু হারও কমেছে। বেড়েছে গড় আয়ু।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপ ২০১৬ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন’ অনুযায়ী, প্রজননক্ষম বয়সে অর্থাৎ ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সে নারীদের ১৩ ভাগ মৃত্যু হয় সন্তান জন্ম দেয়ার সময়। মায়েদের প্রতি অবহেলা ও অবজ্ঞার কারণেই এ মৃত্যু হয় বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যদিও এই হার নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভিন্ন বক্তব্য রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ২০০১ ও ২০১০ সালে মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপ প্রকাশ করা হয়। ২০০১ সালের জরিপে বলা হয়েছিল, ২০ ভাগ নারীর মৃত্যুর কারণ মাতৃত্ব সংক্রান্ত। অর্থাৎ সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে ওই মায়েদের মৃত্যু হয়েছে। ২০১০ সালে তা কমে ১৪ ভাগে নেমে আসে। ২০১৬ সালে অর্থাৎ ছয় বছরের ব্যবধানে তা নেমে আসে ১৩ ভাগে।

২০১৫ সালের বিশ্ব জনসংখ্যা প্রতিবেদন হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৪৭.৬ মিলিয়ন বা শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ ১০-২৪ বছর বয়সী কিশোর ও তরুণ। বিভিন্ন সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, বিদ্যালয়ে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষার অভাব, মা-বাবা, স্বজন ও শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা না পাওয়ার কারণেই তারা ভুল জানে, ভুল কথা বিশ্বাস করে। এমনকি সঠিক তথ্য না জানার কারণে কখনো কখনো খারাপ লোকেদের পাল্লায় পড়ে যায়। ফলে হারিয়ে যায় তাদের জীবনের ছন্দ।

পরশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’র উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা আরো বলেন, বয়ঃসন্ধিকালের বিষয়টি মাথায় রেখেই কিশোরীদের কল্যাণে সরকার স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র (এএফএইচসি) চালু করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিওর স্বাস্থ্যকর্মীরা দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য প্রোগ্রামের মাধ্যমে তথ্যপ্রদান, কাউন্সেলিং ও কর্মশালার উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে পরশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা ছাত্রীদের মাঝে সময় উপযোগী যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। তবে এ কার্যক্রম কে আরো বেগবান ও গতিশীল করার লক্ষ্যে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত স্কুল পরিদর্শন আরো গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠান শেষে উক্ত স্কুলের প্রায় দেড়শ শতাধিক ছাত্রীদের মাঝে বয়সন্ধিকালীন সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

Tag :

One thought on “বয়ঃসন্ধিকালীন নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক কর্মশালা ও ঘূর্ণিঝড় রিমেল এ ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ 

  1. Hey I am so thrilled I found your blog, I really found you
    by accident, while I was browsing on Bing for something
    else, Nonetheless I am here now and would just like to say thanks
    a lot for a marvelous post and a all round interesting
    blog (I also love the theme/design), I don’t have time
    to browse it all at the minute but I have bookmarked it and also added your RSS feeds, so when I
    have time I will be back to read a lot more, Please do keep up
    the great jo.

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নড়াইলে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে স্কুল শিক্ষিকাকে হত্যা !

বয়ঃসন্ধিকালীন নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক কর্মশালা ও ঘূর্ণিঝড় রিমেল এ ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ 

Update Time : ০৬:৪৯:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪

আশিকুর রহমান শান্ত, ভোলা : ভোলায় বয়ঃসন্ধিকালীন নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিষয়ক কর্মশালা ও ঘূর্ণিঝড় রিমেল এ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে পরশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’র আয়োজনে ত্রাণ বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ১০ টায় শহরের চরনোয়াবাদ এলাকায় ওবায়দুল হক বাবুল মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়ানুর রহমান বিপ্লব এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভোলা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইউনুছ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ এর নিবার্হী অফিসার সজল চন্দ্র শীল, ভোলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ভোলা আবৃত্তি সংসদ এর সভাপতি সামস্ উল আলম মিঠু, ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ এর ভাইস চেয়ারম্যান শাহ্ আলী নেওয়াজ পলাশ, উপজেলা পরিষদ এর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছালেহা আক্তার চৌধুরী, দৈনিক ভোলার বানী এর সম্পাদক মাকসুদুর রহমান ও অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কাশেম এবং পরশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা এর সভাপতি মাহাবুবা ইসলাম সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

এ সময় অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে বাংলাদেশের নারীদের মাঝে সচেতনতা বেড়েছে। শুধু শহরাঞ্চলেই নয়, প্রত্যন্ত গ্রামেও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বেড়েছে এ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সচেতনতা। এখন অনেক কিশোরীই স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী কিংবা ফার্মেসি থেকে স্যানেটারি ন্যাপকিনসহ তাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করছে।

সদর উপজেলা পরিষদ এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইউনুছ তার বক্তব্যে বলেন, সরকার দেশজুড়ে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে চিকিৎসাসেবা। নারীদের স্বাস্থ্য সচেতনতার ফলে এখন মা ও শিশুর মৃত্যু হারও কমেছে। বেড়েছে গড় আয়ু।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপ ২০১৬ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন’ অনুযায়ী, প্রজননক্ষম বয়সে অর্থাৎ ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সে নারীদের ১৩ ভাগ মৃত্যু হয় সন্তান জন্ম দেয়ার সময়। মায়েদের প্রতি অবহেলা ও অবজ্ঞার কারণেই এ মৃত্যু হয় বলে ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যদিও এই হার নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভিন্ন বক্তব্য রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ২০০১ ও ২০১০ সালে মাতৃমৃত্যু ও স্বাস্থ্যসেবা জরিপ প্রকাশ করা হয়। ২০০১ সালের জরিপে বলা হয়েছিল, ২০ ভাগ নারীর মৃত্যুর কারণ মাতৃত্ব সংক্রান্ত। অর্থাৎ সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে ওই মায়েদের মৃত্যু হয়েছে। ২০১০ সালে তা কমে ১৪ ভাগে নেমে আসে। ২০১৬ সালে অর্থাৎ ছয় বছরের ব্যবধানে তা নেমে আসে ১৩ ভাগে।

২০১৫ সালের বিশ্ব জনসংখ্যা প্রতিবেদন হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৪৭.৬ মিলিয়ন বা শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ ১০-২৪ বছর বয়সী কিশোর ও তরুণ। বিভিন্ন সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, বিদ্যালয়ে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষার অভাব, মা-বাবা, স্বজন ও শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা না পাওয়ার কারণেই তারা ভুল জানে, ভুল কথা বিশ্বাস করে। এমনকি সঠিক তথ্য না জানার কারণে কখনো কখনো খারাপ লোকেদের পাল্লায় পড়ে যায়। ফলে হারিয়ে যায় তাদের জীবনের ছন্দ।

পরশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা’র উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা আরো বলেন, বয়ঃসন্ধিকালের বিষয়টি মাথায় রেখেই কিশোরীদের কল্যাণে সরকার স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্র (এএফএইচসি) চালু করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিওর স্বাস্থ্যকর্মীরা দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য প্রোগ্রামের মাধ্যমে তথ্যপ্রদান, কাউন্সেলিং ও কর্মশালার উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে পরশা সমাজ কল্যাণ সংস্থা ছাত্রীদের মাঝে সময় উপযোগী যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছেন তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। তবে এ কার্যক্রম কে আরো বেগবান ও গতিশীল করার লক্ষ্যে কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত স্কুল পরিদর্শন আরো গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠান শেষে উক্ত স্কুলের প্রায় দেড়শ শতাধিক ছাত্রীদের মাঝে বয়সন্ধিকালীন সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।