ঢাকা ০৯:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাদ দিতে হবে- জোনায়েদ সাকি

  • তানজিল হোসেন
  • Update Time : ০৫:২৭:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
  • ৫ Time View

তানজিল হোসেন 

বরিশালে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলে গণসংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে অদ্য ১৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাতের গণসংলাপে প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “বৈষম্যহীন দেশ গড়তে হলে জনসাধারণের মধ্যে বিরাজ করা ধনবৈষম্য দূর করতে হবে। গত ১৫ বছর ধরে লুটপাট ও ফ্যাসিস্ট আচরণ করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।

কেবল এই ১৫ বছরই নয়, দেশে ৫৩ বছর ধরে দুঃশাসন চালিয়েছে। সমাজের গরীব মানুষগণ ন্যায্যতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কারণ দেশের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যিনিই ক্ষমতায় আসেন তিনিই সমস্ত ক্ষমতার মালিক বনে যান। দেশে ক্ষমতার এমন ভারসাম্য তৈরি করতে হবে যাতে জনসাধারণের কাছে প্রধানমন্ত্রী জবাবদিহীতা করতে বাধ্য হয়। সেজন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাদ দেওয়া একান্তই জরুরী বলে মনে করেন দেশের জনগণ।

তিনি আরও বলেন, জবাবদিহীতা নিশ্চিতে রাস্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য লাগবে। সংসদকে দুইকক্ষ বিশিষ্ট হতে হবে। দুই কক্ষের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকতে হবে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন হতে হবে। নির্বাহী বিভাগ থেকে পুরোপুরি আলাদা করে দিতে হবে। গণমাধ্যম কর্মীদেরকে স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে, কারণ কোন সরকার যাতে গণমাধ্যমের উপর খবরদারি করতে না পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদি এই ধরণের ক্ষমতার ভারসাম্য হয়। তাহলে দেশের সব ধর্ম, মতের নাগরিক তাদের অধিকার পাবে। এবং দেশের রাস্তায়- ফুটপাতে মানুষ ঘুমায় আর অতীতের ফ্যাস্টিস্ট সরকার আমাদের উন্নতির কথা শোনায়।

কিন্তু দেশে অট্টালিকা বেড়েছে অন্যদিকে ফুটপাতে মানুষ বেড়েছে। তার মানে একদলের হাতে লাখো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। ১৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। দেশের মানুষ ফসল ফলায়, শিল্পে সম্পদ তৈরি করে অন্যদিকে কতিপয় লোক রাস্ট্রের সমস্ত টাকা পকেটে ঢুকিয়ে বিদেশে পাচার করে। এই পাচার দেশের মাটিতে আর হতে দেওয়া হবে না। ভবিষতে লুটপাট পাচার বন্ধ হবে তবে যা পাচার হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে হবে।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, কাঁচা বাজারের দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি একশ’ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই, দ্রব্যমূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। অতীতের সিন্ডিকেটের কারণে দাম কমাতে পারছে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমরা বলতে চাই উচ্চমূল্য রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেন। গ্রাম থেকে পণ্য আসতে যে চাঁদাবাজী হয়, চাতাল ও মিল মালিকরা যে কারসাজি করে ভয়ংকরভাবে দাম বৃদ্ধি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। মানুষ এই গণঅভ্যূত্থানকে সমর্থন করেছে বলে আশা করে আছে। মানুষ কিছু বলছে না, কারণ জনসাধারণ আপনাদের সঙ্গে আছে। তাই কাজ দেখান। কোনো লুটেরাদের কাছে মাথা নত করবেন না।

এ ছাড়াও জোনায়েদ সাকি শিক্ষা-স্বাস্থ্যে অধিক বাজেট প্রণয়ন, সব নাগরিকের বাসস্থান নিশ্চিত ও প্রাথমিক শিক্ষক’সহ সব শিক্ষকদের পূর্ণ মর্যাদা দেওয়ার আহ্বান জানান।

গণসংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল ও কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম আমজাদ হোসেন। দলের বরিশাল জেলার সমন্বয়কারী দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলুর সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেছেন জেলা কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান মিরাজ।

ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থান পরবর্তী বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য এ সংলাপ হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নড়াইলে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে স্কুল শিক্ষিকাকে হত্যা !

ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাদ দিতে হবে- জোনায়েদ সাকি

Update Time : ০৫:২৭:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

তানজিল হোসেন 

বরিশালে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে নগরীর অশ্বিনী কুমার হলে গণসংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে অদ্য ১৭ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রাতের গণসংলাপে প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “বৈষম্যহীন দেশ গড়তে হলে জনসাধারণের মধ্যে বিরাজ করা ধনবৈষম্য দূর করতে হবে। গত ১৫ বছর ধরে লুটপাট ও ফ্যাসিস্ট আচরণ করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।

কেবল এই ১৫ বছরই নয়, দেশে ৫৩ বছর ধরে দুঃশাসন চালিয়েছে। সমাজের গরীব মানুষগণ ন্যায্যতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কারণ দেশের সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যিনিই ক্ষমতায় আসেন তিনিই সমস্ত ক্ষমতার মালিক বনে যান। দেশে ক্ষমতার এমন ভারসাম্য তৈরি করতে হবে যাতে জনসাধারণের কাছে প্রধানমন্ত্রী জবাবদিহীতা করতে বাধ্য হয়। সেজন্য সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাদ দেওয়া একান্তই জরুরী বলে মনে করেন দেশের জনগণ।

তিনি আরও বলেন, জবাবদিহীতা নিশ্চিতে রাস্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য লাগবে। সংসদকে দুইকক্ষ বিশিষ্ট হতে হবে। দুই কক্ষের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকতে হবে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন হতে হবে। নির্বাহী বিভাগ থেকে পুরোপুরি আলাদা করে দিতে হবে। গণমাধ্যম কর্মীদেরকে স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে, কারণ কোন সরকার যাতে গণমাধ্যমের উপর খবরদারি করতে না পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদি এই ধরণের ক্ষমতার ভারসাম্য হয়। তাহলে দেশের সব ধর্ম, মতের নাগরিক তাদের অধিকার পাবে। এবং দেশের রাস্তায়- ফুটপাতে মানুষ ঘুমায় আর অতীতের ফ্যাস্টিস্ট সরকার আমাদের উন্নতির কথা শোনায়।

কিন্তু দেশে অট্টালিকা বেড়েছে অন্যদিকে ফুটপাতে মানুষ বেড়েছে। তার মানে একদলের হাতে লাখো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। ১৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। দেশের মানুষ ফসল ফলায়, শিল্পে সম্পদ তৈরি করে অন্যদিকে কতিপয় লোক রাস্ট্রের সমস্ত টাকা পকেটে ঢুকিয়ে বিদেশে পাচার করে। এই পাচার দেশের মাটিতে আর হতে দেওয়া হবে না। ভবিষতে লুটপাট পাচার বন্ধ হবে তবে যা পাচার হয়েছে তা ফিরিয়ে আনতে হবে।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, কাঁচা বাজারের দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি একশ’ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই, দ্রব্যমূল্য আকাশ ছুঁয়েছে। অতীতের সিন্ডিকেটের কারণে দাম কমাতে পারছে না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমরা বলতে চাই উচ্চমূল্য রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নেন। গ্রাম থেকে পণ্য আসতে যে চাঁদাবাজী হয়, চাতাল ও মিল মালিকরা যে কারসাজি করে ভয়ংকরভাবে দাম বৃদ্ধি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। মানুষ এই গণঅভ্যূত্থানকে সমর্থন করেছে বলে আশা করে আছে। মানুষ কিছু বলছে না, কারণ জনসাধারণ আপনাদের সঙ্গে আছে। তাই কাজ দেখান। কোনো লুটেরাদের কাছে মাথা নত করবেন না।

এ ছাড়াও জোনায়েদ সাকি শিক্ষা-স্বাস্থ্যে অধিক বাজেট প্রণয়ন, সব নাগরিকের বাসস্থান নিশ্চিত ও প্রাথমিক শিক্ষক’সহ সব শিক্ষকদের পূর্ণ মর্যাদা দেওয়ার আহ্বান জানান।

গণসংলাপে বিশেষ অতিথি ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল ও কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম আমজাদ হোসেন। দলের বরিশাল জেলার সমন্বয়কারী দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলুর সভাপতিত্বে সঞ্চালনা করেছেন জেলা কমিটির নির্বাহী সমন্বয়কারী আরিফুর রহমান মিরাজ।

ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থান পরবর্তী বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য এ সংলাপ হয়।